,

চুনারুঘাটে তিন চা বাগানের দেড় হাজার শ্রমিকের কর্মবিরতি

চুনারুঘাট প্রতিনিধি : দুর্গাপূজার বোনাস ও এরিয়ার (বকেয়া বর্জিত বেতন) টাকা পরিশোধের দাবিতে দুই ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার তিনটি চা বাগানের শ্রমিকরা। গতকাল বুধবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে দেওন্দি চা বাগানের নাচ ঘরে এই কর্মবিরতি পালন শুরু করেন তিন চা বাগানের প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক। এ সময় সেখানে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রমিক নেতারা জানান, চুনারুঘাটের দেওন্দি, গিলানি ও রঘুনন্দন চা বাগানের শ্রমিকদের ১৯ মাসের এরিয়ার প্রায় ৪২ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। এছাড়া, দুর্গা পূজার বোনাস জনপ্রতি ৫ হাজার ২০০ টাকা করে প্রায় ৭২ লাখ টাকা পাওনা আছে তাদের।
শ্রমিকদের অভিযোগ, দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। মালিকপক্ষ টাকা দেয়ার বারবার তারিখ করেও তাদের এরিয়া ও বোনাস পরিশোধ করেনি। সবশেষ গত ২ অক্টোবর মালিক পক্ষ সময় চেয়ে শ্রমিক নেতাদের একটি চিঠি দেন। দেওন্দি চা বাগানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম ওয়াহিদুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১০ অক্টোবরের মধ্যে সকল পাওনা পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু ১০ অক্টোবরও মালিকপক্ষ টাকা পরিশোধ করেনি।
দেওন্দি চা বাগানের শ্রমিক নিরালা ভৌমিক বলেন, ‘আমরা বারবার শুধু আশার কথা শুনে আসছি। কিন্তু আমাদের টাকা পরিশোধ করছেন না। উনারা শুধু বলেন বাগান লোকসানে! তাহলে বাগান লাভে থাকে কখন?’
রঘুনন্দন চা বাগানের শ্রমিক সুশীলা মালা বলেন, ‘সারা বছর কাজ করে আশায় থাকি দুর্গা পূজায় সন্তানদের ভালো কাপড় কিনে দেব। কিন্তু পূজা আসার আগ মুহূর্তে টাকা নিয়ে টালবাহানা করছেন মালিক পক্ষ। যদি আজকের মধ্যে এর সমাধান না করেন তাহলে আমরা লাগাতার আন্দোলন করে যাব।’
দেওন্দি চা বাগানের সুজিত্র বাউরি বলেন, ‘দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে আমাদের এরিয়া ও বোনাসের টাকা দিয়ে প্রতিমার সাজ-সজ্জা করে থাকি। টাকা না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত আমাদের প্রতিমার রংয়ের কাজসহ মন্ডপের সাজ-সজ্জা করতে পারছি না।’
লস্করপুর ভ্যালির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনি শংকর বাউরি বলেন, ‘মালিকের টাল বাাহানা শুনতে শুনতে এখন শ্রমিরা ফুসে উঠেছেন। বুধবার দুই ঘন্টার কর্মবিরতি পালন শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে দেনা-পাওনা শোধ না হওয়া পর্যন্ত বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।’
দেওন্দি চা বাগানের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘তাদের দাবি সবই সঠিক। কিন্তু চা বাগানের উৎপাদন খারাপ, মার্কেট খারাপ থাকায় আয় কম। যার ফলে টাকা যথাসময় দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে টাকা পরিশোধ করতে চাচ্ছে।’


     এই বিভাগের আরো খবর